রেকর্ড ভাঙার দৌড়ে ডেঙ্গু, ১৫ দিনেই মৃত্যু ৫৩

দিন যতই যাচ্ছে, তত সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জুলাই মাসের প্রথম ১৫ দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। চলতি মাসের এপর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৪৭২ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ২৭০ জন, মৃত্যু হয় তিন জনের। ২ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৫০৯ জন, মারা যান দুই জন। ৩ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৩৬ জন, মারা যান চার জন। ৪ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৭৮ জন, মারা যান পাঁচ জন। ৫ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৮৪ জন, মারা যান এক জন। ৬ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৬১ জন, মারা যান দুই জন। ৭ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ১৮২ জন, মারা যান এক জন। ৮ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৮২০ জন, মারা যান দুই জন। ৯ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৮৩৬ জন, মারা যান ছয় জন। ১০ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৮৮৯ জন, মারা যান ৩ জন। ১১ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ১০৫৪ জন, মারা যান ৭ জন। ১২ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ১২৪৬ জন, মারা যান ৫ জন। ১৩ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ১২৩৯ জন, মারা যান ৫ জন। ১৪ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৪৫ জন এবং ১৫ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ১৬২৩ জন, মারা যান ৭ জন।
গত জুন মাসে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর মারা গেছেন ৩৪ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ হবে। আগামী দিনগুলোতে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এজন্য তারা জরুরি ভিত্তিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন সামনের দিনগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন। এজন্য তিনি সবাইকে সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
গত কয়েক দিন ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার জানান, ঈদের ছুটি থাকার কারণে বিভিন্ন বাসা বাড়ি, অফিস আদালত বন্ধ ছিল। বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে এসব অফিস আদালত এবং বাসা বাড়ির বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমা হয়েছে। এসব স্থানে এডিস মশার নিরবচ্ছিন্ন বিস্তার হচ্ছে। এ কারণেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক বিশেষ বার্তায় জানানো হয়েছে, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পরিবেশ পরিচ্ছন্নতার ওপর নজর দিতে হবে। জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ সম্পর্কে বলা হয়েছে-
তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, শরীরের পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা, বমি বমি ভাব, নাসিয়া গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া, শরীরে র্যাশ ওঠা, শরীরে লালচে দানা, পাতলা পায়খানা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।