বাবা দিবসে মায়ের গল্প!

ডেস্ক নিউজ:
বাবা দিবসে সাধারণত বাবাকে নিয়ে নাটক, টেলিফিল্ম নির্মিত হয়। কিন্তু এবারের বাবা দিবস উপলক্ষ্যে নির্মিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী গল্প। গত ১৬ জুন এনটিভি’তে প্রচারিত হয়েছে কান্তি ভূষণ তরফদারের রচনায় মোর্শেদুর রহমান অন্তর পরিচালিত নাটক ‘অব্যক্ত অনুভূতি’। নাটকটি এখন দেখা যাচ্ছে এনটিভি’র নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। নাটকটির গল্প একজন একা মা ও তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে। পুরো গল্পে মা-মেয়ের খুনসুটি, তাদের ভেতরকার অপ্রাপ্তি ও একে-অপরকে অবলম্বন করে বেঁচে থাকার কাহিনী চিত্রায়িত হয়েছে। মা ও মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যথাক্রমে সাবেরী আলম ও অলংকার চৌধুরী। বাবার চরিত্রটি করেছেন মাহবুব আলম।
নাটকটিতে কাজ করা প্রসঙ্গে অভিনেত্রী অলংকার চৌধুরী বলেন: “আমি সবসময় ভালো গল্পে কাজ করতে চাই। যে গল্পটি আমার চারপাশের মানুষের অনুভূতিগুলোকে প্রকাশ করে। আমরা সবাই জানি যে কষ্ট বেশিক্ষণ ভেতরে চেপে রাখলে কষ্ট বাড়ে। তাই কষ্টটা শেয়ার করা খুবই জরুরী। আমি আমার গল্পের মাধ্যমে মানুষের ভেতরকার অনুভূতিগুলো জানানোর চেষ্টা করি। অবর্ণনীয় অনুভূতির এই গল্পটি আমাদের সমাজেরই কোনো না কোনো বাচ্চার গল্প। গল্পটি আমার খুবই কাছ থেকে দেখা একটি গল্প। সত্যিকার অর্থে এ ধরণের গল্পে কাজ করতে খুবই ভালোবাসি। কারণ এখানে অভিনয়ের জায়গা আছে। গল্পটি লিখেছেন কান্তি ভূষণ তরফদার এবং পরিচালনা করেছেন মোর্শেদুর রহমান অন্তর। তারা অত্যন্ত চমৎকারভাবে কাজটি করেছেন। টিমের সবাই খুবই সাপোর্টিভ ছিলেন, সবাই দায়িত্ব নিয়ে কাজটি শেষ করছেন। আমি আমার সাথে এই টিমের অনেক মিল খুঁজে পাই! তাদের সাথে কাজ করে একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি যে তাদেরও কাজের প্রতি অনেক ভালোবাসা, অনেক শ্রদ্ধা এবং অনেক নিষ্ঠা রয়েছে। যা আমাকে অভিভূত করেছে!”
গত ১৬ই এপ্রিল ২০২৩, উত্তরার বিভিন্ন লোকেশানে নাটকটির শ্যূটিং শুরু হয়। দোলনচাঁপা শ্যূটিং হাউজ, ৪নং সেক্টর ও ৭নং সেক্টর লেকপাড়ে শ্যূটিংয়ের মধ্য দিয়ে পরবর্তী দুইদিনে নাটকটির প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হয়।
নাটকটির নির্মাতা মোর্শেদুর রহমান অন্তর তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে জানান: “আমি গল্প বলতে ভালোবাসি। আমি সব সময় মানুষের দুঃখ, বেদনা, হাসি, সব ধরনের অনুভূতি গল্পের মাধ্যমে প্রকাশ করতে চাই। “অব্যক্ত অনুভূতি” এমনই একটি গল্প, যেখানে মোনা তার ভেতরে ধারণ করা বেদনা এবং ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ করে। গল্পটি লিখেছেন কান্তি ভূষণ তরফদার। অসাধারণ সাবলীল অভিনয় দিয়ে আমার কল্পনায় দেখা ‘মোনা’ চরিত্রটিকে জীবন্ত রূপ দিয়েছেন অভিনেত্রী অলংকার চৌধুরী। আমার টিমের সবাই গল্পটি পছন্দ করেছে এবং কঠোর পরিশ্রম করে পুরো কাজটি সম্পন্ন করেছে। পুরো টিমের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় আমি গল্পটিকে জীবন্ত রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। দলের সবার পেশাদারিত্ব ও কাজের প্রতি ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ।”
নাটকটির রচয়িতা এবং একইসাথে এটির প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করা কান্তি ভূষণ তরফদার বলেন: ‘অব্যক্ত অনুভূতির’ মতো একটি গল্প লেখার সুযোগ পাওয়া এবং এটি নির্মাণের সাথে যুক্ত থাকতে পারা নিঃসন্দেহে অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার। ভিউয়ের দৌরাত্ম্য আর তথাকথিত ট্রেন্ডি গল্প নির্মাণের সময়ে একটি ভালো গল্প নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সাধারণত একজন লেখকের কাজ চিত্রনাট্য লেখা পর্যন্তই। পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন করে টিমের আরো অনেকজন মানুষ মিলে। তরুণ নির্মাতা মোর্শেদুর রহমান অন্তর, সিনেমাটোগ্রাফার সোহাগ খান, অভিনয়শিল্পী অলংকার চৌধুরী, সাবেরী আলমসহ পুরো টিম মিলে কাজটিকে চমৎকারভাবে ভিজ্যুয়ালাইজ করেছেন। আশা করি দর্শক কাজটি পছন্দ করবেন।”
নাটকটি প্রযোজনা করেছেন বিথী আক্তার ঊর্মি। সোহাগ খানের সিনেমাটোগ্রাফিতে নির্মিত নাটকটির সম্পাদনা ও রঙবিন্যাস করেছেন হাবিবুর রহমান হাবিব। আবহ সঙ্গীতে ছিলেন আপেল মাহমুদ এমিল। এছাড়া ফটোগ্রাফি করেছেন ইকরামুল হাসান এবং পি.আর ও ক্রিয়েটিভ ডিজাইনে ছিলেন রাহাত ইসলাম। নাটকটির প্রচার সমন্বয় করেছে উইফিক। সহকারী পরিচালক হিসেবে যুক্ত ছিলেন আরিফিন রিকো এবং রূপসজ্জায় মালেক ফয়সাল।
বাবা দিবসে সবাই চাইলেও তার বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট দিতে পারে না। বাবা থাকতেও বাবার পরিচয় লুকিয়ে বেঁচে থাকতে হয় অনেককে। বাবা দিবসকে কেন্দ্র করে নির্মিত হলেও এটি কেন মায়ের গল্প জানতে হলে দেখতে হবে পুরো নাটক।